আমরা সবাই জানি ভারতে ফুটবলের খেলার ইতিহাস । ফুটবলের জনপ্রিয়তা ভারতে শুধু কয়েকটি রাজ্যের মধ্যেই আছে । ক্রিকেটের মতো ফুটবল কে ও যদি গুরুত্ব দেওয়া হতো তাহলে ভারত এতদিনে বিশ্বকাপে পৌঁছে যেত । এর অনেক কারন থাকতে পারে তার মধ্যে কয়েকটি কারণ হলো প্রতিভা কে সুযোগ না দেওয়া, অর্থের অভাব এবং জাতপাতের ছড়াছড়ি ।
![]() |
Sunil Chetri Captain : India Football Team |
ভারতে পাড়া-মহল্লা গ্রাম গুলি তে এমন অনেক ছেলে মেয়ে আছে যারা অর্থের অভাবে, ঠিক মতো সুযোগ না পাবার অভাবে এবং জাতিবৈশ্যমের শিকার হয়ে ফুটবলে এগিয়ে আসতে পারছে না । বিশেষ করে আদিবাসী সম্প্রদায়ের ছেলে মেয়েরা ।
ভারতে যদি এই সব জিনিসের অবসান হয় তাহলে বিশ্ব ফুটবলে ভারত অনেক উন্নতি করবে । ভারতে যদি কোন মানুষ সফল হয় তার আগে মানুষ এটা খুঁজে যে মানুষটি কোন সম্প্রদায়ের ? আদিবাসী নয় তো ? কোন জাতের ?
বিদেশে যখন কোন মানুষ সাফল্য পায় সেখানকার মানুষ সেই খুশিতে সবাই আনন্দ করে । সেখানে কোন ফুটবলার যদি সাফল্য পায় তো সেখানকার মানুষ তাকে ফুটবলার ই বলে । এটা বলে না যে সে মানুষটা আদিবাসী সম্প্রদায়ের কিংবা এই জাতের লোক ।
পাড়া-মহল্লা-এলাকা-গ্রাম গুলি প্রতিভায় ভরপুর।বিশ্বাস হচ্ছে না? তাহলে শুনুন-- পেলে,ম্যারাডোনা,জিদান,নেইমার এঁরা সবাই কিন্তু সেই আদিবাসী পরিবারেই জন্মগ্রহণ করেন।
ম্যারাডোনার জন্ম গৌরানি উপজাতি পরিবারে।ম্যারাডোনা স্পানিস বংশোদ্ভূত নয়।তাঁর বাবা ছিলেন গৌরানী আদিবাসী।
পেলের পূর্বপুরুষদের দাসত্ব করতে আনা হয়েছিলো ব্রাজিলে।বস্তির কলোনিতে ছিলো পেলের বসবাস।
বস্তির আদিবাসী ছেলে বিশ্বের সর্বশ্রেষ্ঠ ফুটবল খেলোয়াড় হিসেবে স্বীকৃতি পেলো। এই বিশ্বসেরা ফুটবলারের বাবা টয়লেট পরিষ্কার করতেন আর মা বড়লোকের বাড়ীতে ঝাড়ু দিতেন,থালাবাসন ধুতেন। অর্থনৈতিক অবস্থা এতটাই খারাপ ছিলো যে পেলে মাত্র দশ বছর বয়স থেকেই জুতা পালিশ করতে শুরু করেন।সেই ছেলে আজ বিশ্বসেরা ফুটবলার।এটা ব্রাজিলেই সম্ভব,ভারতে নয়। ব্রাজিলে যদি জাতের জাতাকলে পেলেকে ঘৃণা করা হতো,যদি সুযোগ না দেয়া হতো,তাহলে পেলে কী আজ বিশ্বসেরা ফুটবলার হতে পারতো???
জাত কাজের সাথে সম্পর্কযুক্ত, জাত কখনোই চিরস্থায়ী হতে পারেনা।কিন্তু এই ভারতে জাত চিরস্থায়ী হয়েছে।মুচির ছেলে ডাক্তার হলেও জাতের খোটা শুনতে হয়। অধ্যাপক হলেও পত্রিকায় শিরোনাম আসে দলিত অধ্যাপক।এটা কেবলমাত্র ভারতেই সম্ভব।
এসসি,এসটি,ওবিসি, আদিবাসী এলাকায় প্রতিভা লুকিয়ে আছে।সেই প্রতিভাকে খুঁজে বের করতে হবে,সুযোগ দিতে হবে।
ভারতের খেলাধুলার জগত ব্রাহ্মণ, ক্ষত্রিয়, বৈশ্যদের দখলে। খেলাধুলার জগতেও জাতপাতের ছড়াছড়ি। এগুলো বন্ধ না হলে ভারতের উন্নতি কখনোই সম্ভব না।
নতুন প্রজন্মকে, প্রতিভা কে সুযোগ দাও বিশ্ব ফুটবলে ভারত ঠিক এগিয়ে যাবে
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন